অন্যান্য কলকাতা 

Nawshad Siddiqui: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রাজ্যের বাঙালি মুসলিমদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত ! কেন ? জানতে হলে ক্লিক করুন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : বাংলার মুসলমান সমাজের উচিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ থাকা । কারণ দীর্ঘদিন পর এই বাংলায় একজন যথাযোগ্য বাঙালি মুসলিম নেতা তৈরি করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গত শনিবার ২১ জানুয়ারি ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করার পর অনেকেই ক্ষুদ্ধ হয়েছেন , ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । কিন্ত আমার কোথায় যেন মনে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিনে নিজের অজান্তেই রাজ্যের বাঙালি মুসলিমদের জন্য একটা ভালো কাজ করলেন । তিনি যতদিন রাজনীতিতে থাকবেন ততদিন মমতার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে বাঙালি মুসলমান সমাজ ।

হ্যাঁ, পাঠক বর্গ ! হয়তো আপনারা ভাবছেন নওশাদ সিদ্দিকীকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার জেরে যেভাবে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে তা এক কথায় মানবাধিকার বিরোধী । তারপরেও মমতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে বাংলার মানুষ কেন ? উত্তরে অবশ্যই থাকতে হবে, শুধু বাঙালি মুসলমান নয়, বাঙালি দলিত সমাজের আক্ষরিক অর্থে নেতা হয়ে উঠবেন পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকী ।

Advertisement

কারণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে যেভাবে এবং যে কায়দায় মমতার পুলিশ নওশাদকে গ্রেফতার করেছে তাতে তাঁর জনপ্রিয়তা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়ে গেছে । বাংলায় যদি মমতাকে ক্ষমতায় থাকতে হয় তাহলে নওশাদ সিদ্দিকীর স্মরণ নিতে হবে । না হলে আগামী দিনে এই রাজ্যের বাঙালি মুসলিম ও বাঙালি দলিতদের সমর্থন মমতা পাবেন না । স্বাধীনতা পর মাত্র দুজন বাঙালি মুসলিম নেতা ছিলেন । একজন সৈয়দ বদরুদ্দোজা এবং হুমায়ুন কবীর । এক সময় এই দুজনেই কংগ্রেস সরকারের পতনে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন । সৈয়দ বদরুদ্দোজা এবং হুমায়ুন কবীরদের উদাত্ত আহ্বানে বাংলার হিন্দু-মুসলিম কংগ্রেস বিরোধী হয়ে গিয়েছিল । এরপরেই বামপন্থীরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল । তারপর মাঝে মাঝে কয়েক জন নেতার আর্বিভাব হলেও তাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ক্ষমতাসীন দলের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন ।

একটা সময় এই বাংলায় এক মুসলিম নেতা ছিলেন যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সমীহ করতেন । তাঁকে বলা হতো এই বাংলার বাঘ ! সেই বাঘ এখন বিড়ালে পরিণত হয়ে গেছে । এমনকি তৃণমূলের হাফ নেতারাও তাঁকে নিয়ে বিদ্রুপ করে থাকেন । তাঁর এই পরিণতির জন্য তিনি নিজেই দায়ী । প্রকৃত রাজনীতিবিদ হতে গেলে লোভী হওয়ার দরকার নেই , লোভ একবার এসে গেলে মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে বেশি সময় লাগে না । এরপর হঠাৎ বাংলার রাজনীতিতে আর্বিভাব হল নওশাদ সিদ্দিকীর । তিনি এলেন দেখলেন এবং মানুষের হৃদয় জয় করে নিলেন । যে বিধায়ক ভাঙর থেকে নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় ঢুকতে পারছিলেন না , বাড়ি ভাড়া পাননি । সেই বিধায়কের জন্য ভাঙরের মানুষের হাহাকার করছে কোন জাদু মন্ত্রে ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিচার করেছেন কী ? আপনি ছাড়া আপনার দলের আর কোনো নেতার কী জনপ্রিয়তা নওশাদের ধারে কাছে পৌছেতে পারবে ?

নওশাদ কথা দিয়েছেন তিনি বিক্রি হবেন না । তাঁর বিক্রি হওয়ার প্রয়োজন নেই । তিনি যে বাড়ির সন্তান সেই বাড়ির সন্তান যদি লোভী না হন তাহলে তাঁকে কেউ কিনতে পারবেন না । আর নওশাদ যদি বিক্রি না হন, তাহলে মনে রাখবেন নওশাদ এই বাংলার পরবর্তী নেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন । জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর নওশাদ সিদ্দিকীর জনপ্রিয়তার কাছে হার মানতে বাধ্য হবেন তৃণমূলের রথী মহারথীরা । আর এই বাংলার শাসকের চাবিকাঠি চলে যাবে নওশাদের হাতেই ! তিনি হয়ে উঠবেন এই রাজ্যের রাজনৈতিক উত্থান পতনের নেপথ্য নায়ক । স্বাধীনতার পর যেমন নায়ক হয়ে উঠেছিলেন সৈয়দ বদরুদ্দোজা-হুমায়ুন কবীররা সেই পথে এগিয়ে যাচ্ছেন নওশাদ সিদ্দিকী !

স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশদের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও ফুরাফুরা শরীফে পুলিশ পাঠানোর সাহস দেখায়নি পরাধীন ভারতের ব্রিটিশ শাসকরা , স্বাধীন ভারতে কোনো সরকারই ফুরফুরায় পুলিশ পাঠায়নি, মমতা সরকার পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করার সাহস দেখিয়েছেন ! এজন্যই বাংলার বাঙালি মুসলিম সমাজের উচিত মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা । আর এই কারণেই মমতা এই রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলমানদের কাছে অমর হয়ে থেকে যাবেন!


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ